যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধের আইনে সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন
- By Jamini Roy --
- 18 January, 2025
যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক নিষিদ্ধের আইন বহাল রেখেছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) এ বিষয়ে রায় দেন সুপ্রিম কোর্ট। মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০২২ সালে কংগ্রেসে ব্যাপক সমর্থন পেয়ে আইনটি পাস হয়, যা পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনুমোদন করেন।
আইন অনুযায়ী, আগামী ১৯ জানুয়ারির মধ্যে টিকটককে কোনো মার্কিন কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিতে হবে। বিক্রি না করা হলে, অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যাবে। টিকটক চীনা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আইনের কার্যকারিতা স্থগিত রাখার জন্য সুপ্রিম কোর্টে অনুরোধ জানান। তার যুক্তি ছিল, আগামী ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর এ বিষয়ে রাজনৈতিক সমাধানে পৌঁছানোর জন্য তাকে সময় দেওয়া উচিত। তবে সুপ্রিম কোর্ট তার এই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে।
সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ২০২২ সালে পাস হওয়া এবং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্বাক্ষরিত এই আইনটি সংবিধান লঙ্ঘন করে না। আদালত যুক্তি দেয়, চীন দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ ও গোয়েন্দা কার্যক্রম চালাচ্ছে, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
আইন কার্যকরের দায়িত্ব পরবর্তী প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়েছেন বর্তমান প্রশাসনের মুখপাত্র কারিন জ্যঁ-পিয়েরে। নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী সোমবার (২০ জানুয়ারি) দায়িত্ব গ্রহণের পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
রিপাবলিকান নেতা মাইক ওয়াল্টজের মতে, টিকটক নিষিদ্ধ না করে বিক্রির চুক্তির জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া হতে পারে। অন্যদিকে, নতুন প্রশাসন কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার অধীনে টিকটক পরিচালনার পরিকল্পনাও করছে।
টিকটকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যদি বিক্রির শেষ সময়সীমা বাড়ানো না হয়, তবে অ্যাপটি ১৯ জানুয়ারির পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে গুগল ও অ্যাপলের মতো সেবা প্রদানকারী কোম্পানিগুলোর ভূমিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপগুলোর মধ্যে অন্যতম টিকটক। চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্সের তৈরি এই অ্যাপটি পশ্চিমা দেশগুলোতেও অত্যন্ত জনপ্রিয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ১৭ কোটিরও বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে, যা দেশটির সর্বাধিক ডাউনলোড হওয়া অ্যাপগুলোর মধ্যে একটি।
তবে জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে টিকটককে ঘিরে উদ্বেগ নতুন নয়। চীন সরকারের সাথে তথ্য ভাগাভাগির অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। টিকটকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগই আইনটি পাসের অন্যতম কারণ।
আইনটি কার্যকর হওয়ার পর টিকটকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। অ্যাপটি নিষিদ্ধ হলে এর লাখো মার্কিন ব্যবহারকারী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে তারা কোনো আপস করবে না।
এখন দেখার বিষয়, ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন নতুন প্রশাসন টিকটকের ব্যাপারে কী পদক্ষেপ নেয়।